ঢাকা, ২০ মে ২০২৫:
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বর্তমানে ২৫ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার (১৯ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই তথ্য প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ১৯ মে পর্যন্ত দেশের মোট গ্রস ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ বা জিডিএফআর ছিল ২৫৪৪৪ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ-এর হিসাব অনুযায়ী যেটি BPM6 পদ্ধতিতে নির্ধারিত হয়, সেই হিসেবে রিজার্ভের পরিমাণ এখন ২০ দশমিক ০৭ বিলিয়ন ডলার বা ২০০৭৫.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুনঃ
🔁 পূর্ববর্তী হিসাবের তুলনা:
এর আগে চলতি মাসের ৭ মে পর্যন্ত দেশে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৫৬৭৭ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ১২ দিনের ব্যবধানে গ্রস রিজার্ভে প্রায় ২৩২ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন ডলার হ্রাস পেয়েছে।
একইভাবে, BPM6 পদ্ধতির হিসাব অনুযায়ী ৭ মে পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২০২৯১ দশমিক ২১ মিলিয়ন ডলার। সেখান থেকেও কমে এসেছে প্রায় ২১৫ দশমিক ৬২ মিলিয়ন ডলার।
📉 রিজার্ভ হ্রাসের কারণ:
বিশ্লেষকরা বলছেন, আমদানি ব্যয় পরিশোধ, বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ এবং প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয় প্রত্যাশার তুলনায় কম হওয়াকে এই রিজার্ভ হ্রাসের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল রাখতে তারা নিয়মিত হস্তক্ষেপ করছে এবং তা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্বার্থেই করা হচ্ছে।
📊 BPM6 হিসাব কী?
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের নির্দেশনায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হিসাব করার নতুন পদ্ধতি BPM6 চালু হয়।
এই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহারযোগ্য এবং তরল বৈদেশিক সম্পদগুলোকেই রিজার্ভ হিসেবে ধরা হয়। ফলে গ্রস রিজার্ভ ও BPM6 রিজার্ভে কিছুটা পার্থক্য দেখা যায়।
🔍 সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট:
বর্তমানে দেশের আমদানি ও রপ্তানি ভারসাম্য, রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং বৈদেশিক সহায়তার প্রবণতা বিবেচনায় অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, রিজার্ভ পরিস্থিতি সতর্ক নজরদারির দাবি রাখে।
বিশেষ করে আইএমএফের ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রিজার্ভের শর্ত পূরণ করাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
✅ সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের করণীয়:
রিজার্ভ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে –
-
প্রণোদনা দিয়ে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির উদ্যোগ
-
অপ্রয়োজনীয় আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ
-
রপ্তানি আয় দ্রুত দেশে ফেরানোর জন্য নিয়মিত তদারকি
-
বৈদেশিক সহায়তা ত্বরান্বিত করা
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, “রিজার্ভ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বৈদেশিক লেনদেন ও বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি।”
0 $type={blogger}: