গ্রেপ্তার সাবেক এমপি ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম, আত্মগোপনেও রক্ষা পাননি
সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগ শাসনামলে ছিলেন নানা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সংসদে গান গেয়ে দলীয় প্রধানের মন জয় করার প্রচেষ্টা, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ‘শহীদ’ আখ্যায় নানা ব্যাখ্যা, বিদ্যুৎ বিতরণ নিয়ে অসংলগ্ন বক্তব্য এবং নিজ এলাকার সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েন বারবার।
তার বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকা ও নিজ নির্বাচনী এলাকা মানিকগঞ্জে হত্যাকাণ্ড, হত্যা প্রচেষ্টা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মোট ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে চলে যান। তবে শেষ পর্যন্ত আত্মগোপনেও রক্ষা হয়নি মমতাজের।
আরও পড়ুনঃ
পাহাড় সমান ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া ও আমল
সোমবার (১২ মে) রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে গ্রেপ্তার করে। ডিএমপির মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উত্তাপে রাজধানী যখন উত্তাল, তখন থেকেই মমতাজ বেগম মানিকগঞ্জের নিজ গ্রামে অবস্থান করছিলেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের খবরে তিনি বড় ভাইয়ের বাড়ি, চরদুর্গাপুর গ্রামে আশ্রয় নেন। দুই মাস থাকার পর ছদ্মবেশে—বোরকা পরে—স্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে চলে যান।
তার বিরুদ্ধে রাজধানীর হাতিরঝিল ও সাভারের আশুলিয়া থানায় একটি করে মামলা, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানায় একটি, সিংগাইর থানায় দুটি এবং মানিকগঞ্জ কোর্টে একটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা ও নাশকতার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর ধানমন্ডির স্টার কাবাবের পেছনের একটি বাসা থেকে মমতাজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর-হরিরামপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন মমতাজ বেগম। পরপর তিনবার নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে পরাজিত হন। তবে তিনি সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে সংরক্ষিত নারী আসনে প্রথমবার সংসদ সদস্য হন মমতাজ বেগম। পরবর্তীতে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হন।
0 $type={blogger}: